Free Sanskrit education Label-07

Nataraj Ngo

 সংস্কৃতের উৎপত্তি ও প্রাচীনত্ব

সংস্কৃত ভাষার উৎপত্তি ভারতীয় উপমহাদেশে প্রায় ৩৫০০ বছর আগে। এর প্রাচীনতম রূপ হলো বৈদিক সংস্কৃত, যা প্রধানত ঋগ্বেদের মন্ত্রগুলোতে ব্যবহৃত হয়েছে। সংস্কৃত শব্দটির উৎপত্তি 'সম্' (সম্পূর্ণভাবে) এবং 'কৃত' (করা) ধাতু থেকে, যার অর্থ "সুসম্পাদিত" বা "সুপ্রসিদ্ধ" ভাষা। এই ভাষাকে প্রাচীনকাল থেকেই আধ্যাত্মিক জ্ঞান, দর্শন এবং সাহিত্যচর্চার মাধ্যম হিসেবে ব্যবহৃত হয়েছে।

বৈদিক সংস্কৃত থেকে বিকশিত হয়ে এসেছে লৌকিক সংস্কৃত, যা পরবর্তীকালে সাহিত্য, নাটক এবং ধর্মীয় অনুশাসনে ব্যবহৃত হয়। পাণিনির রচিত অষ্টাধ্যায়ী (খ্রিস্টপূর্ব ৪র্থ শতাব্দী) সংস্কৃত ব্যাকরণকে একটি সুসংগঠিত ও বৈজ্ঞানিক কাঠামো দেয়। পাণিনির ব্যাকরণ এমনই নিখুঁত ছিল যে আধুনিক ভাষাতত্ত্বেও তা উদাহরণস্বরূপ ব্যবহৃত হয়।

সংস্কৃত ভাষার প্রাচীনত্ব কেবল ভারতেই নয়, সমগ্র পৃথিবীর ভাষাতাত্ত্বিক ইতিহাসেও একটি গুরুত্বপূর্ণ স্থান অধিকার করে। এটি ইন্দো-ইউরোপীয় ভাষা পরিবারের একটি শাখা, যা গ্রিক, ল্যাটিন ও অন্যান্য প্রাচীন ইউরোপীয় ভাষার সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে সম্পর্কযুক্ত।

সংস্কৃত ভাষার মাধ্যমে বেদের সংরক্ষণ সম্ভব হয়েছে, এবং এই ভাষা হাজার হাজার বছর ধরে মৌখিকভাবে এবং পরে লিপিবদ্ধভাবে প্রবাহমান থেকেছে। সংস্কৃতের প্রাচীনত্বই তাকে বিশ্বসভ্যতার অন্যতম প্রাচীন ও শ্রদ্ধেয় ভাষা হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছে।


0 Comments